।।তাসনুভা রাইসা।।

মার্কেস বলেছিলেন- ‘আমি আমার বিপ্লবী লেখক বন্ধুদের বলি, সবচেয়ে বড় বিপ্লবী কাজ হল ভালো লেখা। ‘ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার অব সলিটিউড’কে বলা হয় ‘স্প্যানিশ সাহিত্যের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিপ্লব’। পুরো লাতিন আমেরিকায় ভীষণ আদরের সঙ্গে সুপরিচিত এই গ্যাবো’র জীবনের শ্রেষ্ঠতম সময়টুকুও ওই লেখালেখিকেই ঘিরে। কিন্তু কোন সময় ছিল সেটি?

‘গ্যাবোর’ ক্ষেত্রে লেখালেখির আনন্দ আর সংগ্রামের অভিজ্ঞতা এক উপন্যাস থেকে অন্য উপন্যাসে ভিন্ন। ‘ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার অব সলিটিউড’ লেখার আগে দীর্ঘসময় ভেবেছেন তারপরই সেটিকে লেখায় রূপ দিয়েছিলেন, এর পরের ইতিহাস সবারই জানা। আবার তার স্বীকারোক্তি, ‘দি অটাম অফ দি প্যাট্রিয়ার্ক’ লিখতে বেশ কষ্টই হয়েছিল, ১৯৮২ সালে নোবেল জেতার প্রায় ৭ বছর আগে এটি বই আকারে বেরিয়েছিল।

অন্যদিকে মার্কেসের লেখালেখির জীবনে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যায় ‘লাভ ইন দি টাইম অব কলেরা’ লেখার সময়টিতে, তার ভাষ্যমতে, ওই পুরো সময়টি ছিল তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম সুখের সময়। প্রেমের উপন্যাস রচনায় তার দক্ষ হাতের প্রমাণ উপন্যাস ‘লাভ ইন দ্য টাইম অব কলেরা’। এ অনন্য আবেগঘন উপন্যাসে ৭৯ বছর বয়স্কা এক রমণী পঞ্চাশ বছর আগের প্রেমিকের প্রতি সতেজ ভালোবাসা অনুভব করে।

মার্কেসের লেখালেখির প্রাথমিক রসদ ছিল তার স্মৃতি, নস্টালজিয়া। তিনি ছিলেন এমন একজন, যাকে তারই ভাষায় বলা যায় ‘পেশাদার স্মৃতিচারণকারী’। স্মৃতির অতলে ডুব দিয়ে স্মৃতিজাগানিয়া সব ব্যক্তিগত আর পারিবারিক কাহিনীকে অবিশ্বাস্য ভঙ্গিতে চমৎকার আখ্যানে রূপান্তরিত করতে যার বাহাদুরি। তার বাবা-মা’র ভণ্ডুল প্রেম, নৌযানে ভ্রমণের নস্টালজিয়ার নির্যাস ‘লাভ ইন দি টাইম অব কলেরা’র অন্যতম উপাদান। মেক্সিকো শহরে তার বাসায় ‘লাভ ইন দি টাইম অব কলেরা’ উপন্যাস লেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারটি ১৯৮৮ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হয়; সেখান থেকে কিছু চুম্বক অংশ তুলে ধরা হয়েছে এখানে-

মার্কেস : বইটি ছিল পুরোপুরি একটা আনন্দ। এটি আরও দীর্ঘ হতে পারত কিন্তু আমাকে একটি পর্যায়ে লাগাম টানতে হয়েছে। পরস্পরকে ভালোবাসে এমন দু’জনের জীবন নিয়ে বলার থাকে বহু কিছু- যা কখনও শেষ হবে না।

উপন্যাসের শেষ পরিণতির ব্যাপারটি আগে থেকেই নির্ধারণ করে রেখেছিলাম। কারণ এই বইয়ে ‘শেষ করাটা’ ছিল একটা সমস্যাই। বইয়ের প্রধান দুই চরিত্রের একজন বা উভয়কে মেরে ফেলার পক্ষে আমি ছিলাম না। বরং তারা যদি এভাবেই ভালোবেসে জীবনটা পার করে দিচ্ছে এই অবস্থায় শেষ টানা যায় ব্যাপারটা হবে ভীষণ চমৎকার। শুধু বাকি জীবন নয় বরং প্রেমের তরী চলতে থাকে অনাদিকাল...

টাইমস : সেই কথিত ‘ফ্লাইং ডাচম্যানের জাহাজের মতো আপনার উপন্যাসের ‘ভালোবাসার তরী’। আপনার নিজেরও তো নৌযানে চলাচলের অনেক স্মৃতি রয়েছে?

মার্কেস : উপন্যাসের সেই ‘নৌযান’ সম্পর্কে দীর্ঘদিন জানি আমি। অনেকবার চড়া হয়েছে, প্রথম চড়েছি যখন বয়স ১২। আমি কলম্বিয়ায় উপকূলের কাছে বাস করতাম। স্কলারশিপ পেয়ে পড়তে বোগোটায় যাওয়া। বারানকুইল্লা থেকে লা ডরোডা পর্যন্ত যেতে নৌযান ব্যবহার করতাম, সেখান থেকে ট্রেনে করে বোগোটা। ওই সময়ে নদীটি ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছিল। আমার প্রথম এবং চূড়ান্ত নৌযাত্রার মাঝখানে ক্রমশ নদীর এই ক্ষয়ে যাওয়া পর্যবেক্ষণ করেছি যেটি আমার বইতেও উল্লেখ রয়েছে।

এই বইতে আমার দুটো নদী ভ্রমণের উল্লেখ রয়েছে... প্রথমটি ফ্লোরেনটিনো আরিজা যেটা করেছিল... সেটির প্রয়োজন ছিল নদী এবং ল্যান্ডস্কেপ বর্ণনার জন্য। এটি যদি না করতাম তাহলে পুরো বর্ণনাটিকে শেষে রাখতে হতো যখন বেলা শেষে দু’জন বয়স্ক ব্যক্তি তাদের ভ্রমণে বের হয়। সে ক্ষেত্রে দু’জনের ভেতরে সম্পর্কের গভীরতার বিষয়টি ছাপিয়ে এ ব্যাপারটি গুরুত্ব পেত, যেটি আমি চাইনি। সেই প্রেক্ষাপটটি একটি নদীর শৈশবকালীন সতেজতা থেকে পূর্ণ যৌবনের ভরা উদ্যম এবং অতঃপর সময়ের সঙ্গে জীর্ণতা এই পুরো বিষয়টি বইয়ে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছে। আমার শেষযাত্রা ছিল যখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আমার বয়স ২২। তখন নৌযানগুলোর চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ বিষয়গুলো আমার নস্টালজিয়ারই অংশ। সাহিত্যের অণুপ্রেরণায়, কবিতার অণুপ্রেরণার জন্য নস্টালজিয়া অন্যতম উৎস।

টাইমস : বইয়ের বেশিরভাগই ‘কারতেগেনা’ বসে লেখা হয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু বলুন।

মার্কেস : লেখার ওই দু’বছর এমন এক সময় ছিল- যখন আমি ছিলাম ভীষণ সুখী। মানুষ সারাটা জীবন এই ভেবে ভেবেই পার করে দেয় সে আসলে কীভাবে কাটাতে চায়। আমি আমার বন্ধুদের কাছেও জানতে চেয়েছিলাম এ ব্যাপারে, তারাও সঠিকভাবে কেউ কিছু বলতে পারেনি। কিন্তু আমার কাছে এটি পানির মতো পরিষ্কার, আমার জীবনটা আমি সেভাবেই কাটাতে চাই ঠিক ‘লাইফ ইন দ্য টাইম অফ কলেরা’ লেখার সময় যেমন কাটিয়েছিলাম।

আমি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৫টা-৬টার মধ্যে উঠতাম। ৬ ঘণ্টা ঘুমানোই যথেষ্ট ছিল আমার জন্য। তারপর দ্রুত সংবাদগুলো শুনে ফেলতাম। ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত পড়াশোনা করতাম, এ সময় পড়তে না পারলে সারা দিনে আর কখনও হয়ে উঠত না। আমি ছন্দ হারাতাম। তাজা মাছ, লবস্টার বা চিংড়ি নিয়ে আসত কেউ কেউ। আমি সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত লিখতাম। আমার স্ত্রী মার্সেডেস বিচে যেত তার বন্ধুদের সঙ্গে এবং আমার জন্য অপেক্ষা করত। আমি কখনই পুরোপুরি বুঝতে পারিনি... কার কাছে কী চাই, সব সময় মানুষের আসা যাওয়া ছিল। আমি রাস্তায় বের হতাম, সেসব জায়গার সন্ধান করতাম যেখানে আমার উপন্যাসের চরিত্রগুলোর যাওয়ার কথা, কথা বলতাম মানুষের সঙ্গে, তাদের বলার ভাষা, আবহ, নজরে রাখতাম। ফলে পরদিন সকালে আমার হাতে তরতাজা উপকরণ থাকত লেখার যা আমি পথে কুড়িয়ে পেতাম।

এই সাহিত্য রচনাকালীন এ যাবৎকালের সবচয়ে চমকপ্রদ অভিজ্ঞতাও ঘটেছে আমার। ফারমিনা চরিত্রটি কীভাবে পেলাম? ১৯ শতকের শেষের দিকে ক্যারিবিয়ান শহরে অষ্টাদশী একটি মেয়ে, যে তার স্প্যানিশ অভিবাসী বাবার সঙ্গে থাকত। মা’কে আমি দেখিনি, কিছু জানতাম না। মেয়েটির ফুপুকে দেখতাম সব সময়, ফারমিনার নামেই নাম। শুধু মা’কে দেখতে পেতাম না। আমি টেবিলের চারপাশে বসে থাকতাম, পরিবারটি সম্পর্কে বুঝার জন্য, পারস্পরিক সম্পর্ক- কিন্তু মেয়েটির মা’কে কোথাও দেখতাম না। প্রথম প্রথম ফুপুকেই মা বলে মনে হয়েছিল। কিন্ত ভালো করে আগে-পিছে দেখে বুঝলাম, ইনি মা নন, মা-এর চেহারা কেমন, কী নাম ছিল কোনোভাবেই ধারণা করতে পারছিলাম না। একদিন সকালে আমি বুঝতে পারলাম যে, মেয়েটি ছোট থাকতে তার মা মারা যায়। কিন্তু ওই পরিবারে মা-হারা দুঃখটা প্রকাশ পায়নি, মা’র উপস্থিতি ছিল সর্বত্র সবার স্মৃতিতে উজ্জ্বল। এটা আবিষ্কার করে খুব আনন্দিত হয়েছিলাম। এই যুক্তিটা বইয়ে টেনে নিয়ে এসেছিলাম। যে বেঁচে নেই তাকেও জীবিতদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা ছিল, যা ওই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ছাড়া সম্ভব ছিল না।

টাইমস : আপনার উপন্যাসগুলোর পুরুষ চরিত্রগুলো? ফ্লোরেন্টিনোকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

মার্কেস : আমি বাস্তবে তাকে পছন্দ করি না। আমি মনে করি, সে ভীষণ স্বার্থপর, সব পুরুষের মতোই। ফারমিনার ক্ষেত্রে বলব, সে তার ধারণার বাইরে বুর্জোয়া হয়ে উঠেছিল। যেটা তাকে অনেকখানি বদলে দেয় এবং ভীষণ দাম্ভিক করে তোলে। এটি সে অনুধাবন করতে পারে তার খুব বৃদ্ধ বয়সে, যখন সে নৌযানে যাত্রার জন্য সম্মত হয়। এটি করতে তাকে পুরো জীবনের সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন করতে হয়েছিল।

কিন্তু আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছে বইটিতে যার কোনো নাম ছিল না- ‘ক্যারিবিয়ান উপকূলের সমাজ, সমাজের প্রচলিত ধারা নানা কুসংস্কার, প্রাচীন ফ্যাশন রীতি’। আসলে এ সব উপাদানই পুরো কাহিনীকে এগিয়ে নিয়েছে।

টাইমস : আপনি বলেছেন আপনার মা-বাবা’র প্রাক-বৈবাহিক প্রেমের সম্পর্কের ঘটনাটি এই বইয়ের কিয়দাংশে অনুসরণ করা হয়েছে? আপনার মা কি বইটি পড়েছেন?

মার্কেজ : তিনি পুরো বই পড়েছেন কিনা জানি না। তার বয়স এখন চুরাশি। মনে হয় তারা তাকে কিছু অংশ পড়ে শুনিয়েছে। আমার মা জানে এর ভেতরে কী আছে। আমি যখন কারতাজেনায় বসে লেখা শুরু করি তখন প্রতিদিন বিকালে আমি মায়ের কাছে যেতাম এবং মা-বাবাকে আলাদাভাবে অনেক বিষয়ে প্রশ্ন করতাম। আমার বাবা বেঁচে ছিলেন তখনও।

টাইমস : এটির ইংরেজি অনুবাদ পড়েছেন?

আমার ইংরেজি অনুবাদক রাবাসা। তার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে; অনুবাদের মান নিয়ে আমাকে কখনও ভাবতে হয়নি। কিন্তু এবার সে অন্য কাজে জড়িয়ে পরায় আমাকে আরেকজন অনুবাদক খোঁজ করতে হয়েছে। আমি ইংরেজি পড়তে জানি, কিন্তু ফরাসি এবং ইটালিয়ান ভাষায় লেখা কোনো কিছুকে যেভাবে বিচার করতে পারি ইংরেজির ব্যাপারে এতটা পারদর্শী নই। যাচাইয়ের জন্য কয়েকটা অনুবাদ ছিল। এগুলোর ভেতর শুধু প্রথম অধ্যায়টা একবার দেখেছিলাম, খুবই ভালোমানের অনুবাদ ছিল সেটি। প্রকাশকরাও সম্মতি দিয়েছিল। যাই হোক, আমার কী করার আছে? আমি এসব নিয়ে ভাবি না। জাপানিজ, সুইডিশ ডাচ ভাষায়ও অনুবাদ হয়েছে এই বইটি।

টাইমস : অনুবাদকরা কি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ এবং আলোচনা করে?

মার্কেস : মাঝে-মধ্যে প্রকাশক ছোট ছোট বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে নোট পাঠায়। আবার কখনও যেসব বিষয়ে খটকা লাগে সেগুলোর একটি তালিকা পাঠায়। অদ্ভুত ব্যাপার হল, প্রতি ক্ষেত্রে তাদের যে যে ব্যাপারগুলোয় খটকা লাগে একমাত্র ভাষা ছাড়া প্রতিবার বিষয়গুলো একই থাকে।

টাইমস : পাঠকদের কাছ থেকে প্রচুর চিঠি পেয়ে থাকেন। তারা কী কী বিষয় নিয়ে লিখে পাঠায়?

মার্কেস : কোথায় আমি এ ধরনের থিম পেলাম, বা কোনো বিশেষ অধ্যায় বা ওই চরিত্রটি কোথায় পেলাম এ বিষয়গুলো নিয়ে যখন পাঠকরা জানতে চায়, আমি বেশ উপভোগ করি ব্যাপারটা। কারণ উপন্যাসের কোনো ঘটনা বা চরিত্র কোথাও না কোথাও তাদের কোনো কিছুর সঙ্গে মিলে যেত। তারা ভাবত ‘উনি ঠিক আমার এক খালার মতো’, অথবা ঠিক ‘তার’ মতো আমার এক চাচা আছেন। এবং কোনো অধ্যায়ে যে ঘটনার কথা বলা আছে, তাদের গ্রামেও ঠিক এমন কিছু ঘটেছিল। তাদের বিস্ময়, আমি কীভাবে জানলাম। পুরো লাতিন আমেরিকার লোকরা এসব লিখে জানাত, বিশেষ করে- ‘ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার অব সলিচ্যুড’ লেখার পর। তারা ভাবত এ বইয়ের ভেতর ঘটনাবলী তাদের জীবনেরই বহিঃপ্রকাশ।

টাইমস : এ কারণেই কি আপনার উপন্যাস চলচ্চিত্রায়ণের প্রস্তাব এলে আপনি প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ আপনার বইয়ের স্বাতন্ত্র্য হারাবে?

মার্কেস : আসল জিনিস পুরোটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ চলচ্চিত্র সেটি হতে দেয় না। চলচ্চিত্রে গ্রেগরি পেক যে চরিত্রটির রূপদান করেন, সেখানে চরিত্রটিকে মানুষ মনে রাখে, গ্রেগরি পেকের আড়ালে। কিন্তু গ্রেগরি পেক কখনও সেই উপন্যাসটির ভেতর ‘চাচা’ চরিত্রটি হয়ে ওঠেন না, সে ক্ষেত্রে উপন্যাসে আগেই বলে দিতে হয় যে, ‘চাচার’ চেহারা গ্রেগরি পেকের মতো, তাহলেই ‘চাচা’ হিসেবে গ্রেগরি পেককে স্বার্থক মনে হবে।

টাইমস : ‘লাভ ইন দি টাইম অব কলেরা’ কি চলচ্চিত্র হিসেবে আবির্ভূত হবে?

মার্কেস : হতে পারে। একজন লাতিন আমেরিকান পরিচালক যদি কাজটি করেন, আমার অসুবিধা নেই। এটি বলার কারণ, একজন লাতিন আমেরিকান পরিচালকের পক্ষেই সম্ভব লাতিন আমেরিকান আবহ উত্তমরূপে ফুটিতে তোলা- আমাদের চরিত্র, আমরা যেমন, আমাদের সমাজ... কারণ এগুলোই কাহিনীকে ব্যাখ্যা করবে। যাই হোক এটি একটি সমস্যাই বটে। আমার কথা হল, আমি এর ভেতর ঢুকবই না। এমনটি হয়েছে ‘ফ্রান্সেসকো রোসি’র ক্ষেত্রে যিনি ‘ক্রনিকল অব আ ডেথ ফোরটোল্ড’ উপন্যাসকে নাটক বানিয়েছিলেন। তিনি আমাকে চিত্রনাট্য দেখাতে এসেছিলেন, ‘আমি বলেছি, আমাকে দেখিও না, কারণ যদি আমি ওটা পড়ি তাহলে চলচ্চিত্রটিই আর হবে না। তার চেয়ে বরং আমি আমার বই নিয়ে ভাবি, তুমি তোমার ছবি নিয়ে ভাব। আমি একাকী আমার বই লিখি, তুমিও একাই তোমার ছবি বানাও’। এটাই ঘটেছিল শেষ পর্যন্ত এবং পরিচালকও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছিল।