বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে লাগবে না কোনও রেশন কার্ড, সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশের পর জবাবি ভাষণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উদ্বাস্তুদের আশঙ্কা কাটাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'নাগরিকত্বের আবেদন করার পর যদি কারও বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ দায়ের হয় তাহলে নাগরিকত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ওপর থেকে যাবতীয় অভিযোগ নিজে থেকেই প্রত্যাহার হয়ে যাবে। নাগরিকত্ব পাওয়ার পর কারও বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত কোনও মামলা চালানো যাবে না।'

এছাড়া উদ্বাস্তু অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে লাগবে না কোনও রেশন কার্ড।

সোমবার সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশের পর জবাবি ভাষণে এমনটাই বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একই সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেন, এই আইনের আধীনে কেউ নাগরিকত্ব পেলে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা খারিজ হয়ে যাবে। যদিও এই বিল সংবিধানের ৫, ১৪, ২৫, ২৬-সহ বেশ কয়েকটি ধারার বিরোধী বলে সোচ্চার হয় বিরোধীরা। কিন্তু বিরোধীদের দাবি মানতে নারাজ সরকার। যুক্তি দিয়ে বিরোধীদের দাবি খণ্ডন করেন অমিত শাহ।

উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির তীব্র বিরোধিতার মধ্যে সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিলে ছয় দশকের পুরানো নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আগত অমুসলিম শরণার্থীদের সহজেই ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই উত্তরপূর্ব ভারতে বিভিন্ন সংগঠন বিলটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে কারণ তাদের মতে কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তি লঙ্ঘন করার চেষ্টা করছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন ইতিমধ্যেই অসম জুড়ে ২ দিনের বন্ধ ডেকেছে। এদিন বিল পাশ করার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় বলেন, 'এই বিলের পিছনে কোনও রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। কারও সাথে অবিচারের প্রশ্নই আসে না।'

কংগ্রেস প্রথম থেকেই এই বিলটির বিরোধিতা করে এসেছে। আজ বিল পাশের পর কংগ্রেস সাংসদ মনীষ তিওয়ারি বলেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল 'অসংবিধানিক' এবং 'অগণতান্ত্রিক।' আইন ন্যায্য ও বৈষম্যমূলক হওয়া উচিত এবং এই বিলটি এই সমস্ত বিষয়গুলির ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছে।'

কংগ্রেস সাংসদ আরও বলেছেন, 'এটি ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪, অনুচ্ছেদ ১৫, অনুচ্ছেদ ২১, অনুচ্ছেদ ২৫ এবং অনুচ্ছেদ ২৬ এর পরিপন্থী। এই বিলটি অসাংবিধানিক এবং সকলের সমান অধিকারের পরিপন্থী।'