কেরলের প্রখ্যাত নারীবাদী কবি কার্তিকা নায়ার। পুরুষতন্ত্র, নারীর ওপর নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর প্রধান অস্ত্র কবিতা। বেশ কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ইতিমধ্যে ‘আনটিল দ্য লায়ন: ইকোজ ফ্রম মহাভারত’ শীর্ষক কাব্যগ্রন্থ এবং নৃত্য বিষয়ক তথ্যচিত্রের চিত্রনাট্যের জন্য তিনি দুবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। ‘প্রজ্ঞা’ নামে একটি সংগঠনের তরফ থেকে আয়োজিত ২০১২ সালে ১৬ দিন ধরে নারীনির্যাতন বিরোধী ‘নো ভায়োলেন্স নো সাইলেন্স’ শীর্ষক প্রচার অভিযানের সময় তাঁর ‘পঞ্চকন্যা’ শীর্ষক এই কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। অন্যদেশ-এর পাঠকদের জন্য এখানে সেই কবিতাটির বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করা হল। অনুবাদ করেছেন প্রণব আচার্য ।
পঞ্চকন্যা
কার্তিকা নায়ার
আনকোরা নতুন অহল্যা
হে পিতৃগণ, স্বামীরা, হে দেবতাবৃন্দ:
তোমরা হুকুম জারি করে বলে দিতে পার না
কার সঙ্গে হবে আমার পরিণয়, অথবা কার হব শয্যাসঙ্গিনী
এ তো আমার মর্জি। হতে হবে মুক্ত—
তা সে নারীই হোক, হোক নদী অথবা পাষাণ।
আন্তিগোনে: দেহাবশেষ
তোমরা কেটে ফেলতে পার আমার জিহ্বা,
রোধ করতে পার কণ্ঠ আর শ্বাসরোধ করে দিতে পার কবর:
কিন্তু আমার কথাগুলিকে?
হ্যাঁ, কথাগুলিকে। যেন টাটকা শোণিত, সেগুলি ঝরবেই,
বাতাসে, এই ধরিত্রীতে-- আর স্মৃতিতে সেগুলি দাগ হয়ে থেকে যাবে।
আয়েশা: কেমন করে দিতে হয় আঁধারের জন্ম
একেবারে প্রথমদিকে, ছিল না পরদার শাসন,
ছিল না আবডাল, চুপ করিয়ে রাখার অনুশাসন:
তিনি বলেছিলেন, আমরা সমান
তারপরই এল ভীতি, এল শরম
নবীরা এলেন তাদের নিয়ে সশস্ত্র হয়ে: যারা পুরুষ, দেবতা নয়।
দ্রৌপদী: লঙ্ঘন
ওই ভ্রাতারা করবে মহাভোজ
আমার ভাঙা রক্তাক্ত ঊরুতে:
তাদের চোখের দ্যুতি হবে নষ্ট,
করবে স্পর্শ, আরে, তুমি তো আমাকে অনাবৃত করবে না
বরং করবে তোমার দুর্ভাগা অদৃষ্টকেই।
ইভ: পিতৃত্ব
আমাকে জীবন দিয়েছে যে
সে তো সাপ, পিতা নয় :
দিয়েছে প্রজ্ঞা-জ্ঞান, দিয়েছে আসল নিঃশ্বাস।