আজ ১৭ এপ্রিল। কবি, গল্পকার ও অনুবাদক নন্দিতা ভট্টাচার্যের জন্মদিন। অন্যদেশ পরিবার তাঁকে জানাচ্ছে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। পাঠকদের জন্য রইল তার দুটি মৌলিক কবিতা ও দুটি অনুবাদ কবিতা।
দু কিলোমিটার বা সেখানেই
দেখাদেখি ১
পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে গেছে ঢাল, তার খাঁজে পটে আঁকা
এথনিক রেস্তোরাঁ , হঠাৎ এক কলেজ ছুটির রেশ রাখতে দুমদাম
চলে এলে , সঙ্গে চুলবুলি বান্ধবী গায়ে মল মল জামা, সবুজে
সবুজ আর নীলিমায় নীল তখন তোমার নিখিল , চোখ জুড়ে
লেগে থাকে মেঘেদের হামা , ওঁত পেতে ছিল কাল মেঘের দল
দেখনি কখন ছায়া ফেলেছে তোমাদের গায় , এমন তিনটি
মরশুমি ফুল ঘেঁটে না দিলে দাগ লাগে মৌরসি পাট্টায় ...
মেঘেদের টুটি চেপে খবর পৌঁছয় , এমন খবর পাত পাড়ে
ক্যামেরার ক্লিক ঝলকায় ... শরীরের আঁচড় ডাকে আয় আয় ,
চামড়ার শূন্যতা ডিপ সিপ পোশাক হাওয়ায় উড়ে যায় ...
ক্যামেরা তারিফ করে ক্লিভেজ তোমার ...নান্দনিক ভুখ ...
মন স্থবির ... আমি দু কিলোমিটার দূর অথবা সেখানেই দাঁড়িয়ে
দেখি তারিয়ে তারিয়ে চাখে ইন্দ্রের সহস্র চোখ ... দেখি দেখি দেখি ...
দেখাদেখি ২
তোমার শরীরে যখন বুলেট বুলোয় আমি তখন দু কিলোমিটার বা
সেখানেই... পথ ছেড়ে ঘরে আশ্রয় রিমোটের ছায় ...
তুমি হাত তুলে জলে ডোবা মানুষ ...
তোমার কুঁকড়ে ওঠা শরীরে রক্তের ঝাঁক বৃষ্টি মাপে ...
আমি দৃশ্যের পর দৃশ্যের সাথে অঙ্ক কষি বিকেলের কবিতায় ...
বুলেটের টুপটুপে জোঁক শব্দ দেবে আমায় ...তোমার
যন্ত্রণায় বেঁকে ওঠা শরীর ...শব্দ আনবে বৈঠায় ...
আমার চোখ দেখে দেখে দেখে ...রক্তের তুলিতে ঢেকে গেছ তুমি ...
সটান দু হাত ছড়িয়ে শুয়ে আছ রাজপথে ...
কিম্বা ঘটা করে তুলে নেবে কোন আম্বুলেন্স ...
হাসপাতালের স্ট্রেচারে রক্তের চাদর গায়ে জড়িয়ে শুয়ে অমলিন ...
আমার বিকেলের কবিতারা স্ট্যাটাস দাপাবে ...
লাইক লাইক লাইকের তামাম ছোঁয়া গিলে খাবে যত ইল্লোত ...
আমি দেখি দেখেছি দেখব...দেখেই যাব .... ।
একা আছি কুশলেই আছি
মুল অসমীয়া কবিতা - মৃদুল হালৈ
জলের তলায় নিবে যাওয়া
ঘুমের শিখাগুলো নিয়ে
মাছেরা আমায় খুঁজছে
ঘাসের অন্ধকারে
চরে বেড়ায়
তারার চোখ
বকুল ঝরছে
সময়কে পোড়াচ্ছে আগুন
প্রদীপের শিখায় জ্বলছে সন্ধ্যা
নেভে নীরবে
কচিপাতার নরম আঙুলগুলো
বাতাস গেঁথে গেঁথে
আমার জন্যে পথ চায়
কেবল
পাখীর ছানাদের ফোটা চোখের
উড়ন্ত আলো
এই কথা জানে
' ও আছে , ওর মধ্যেই , ও আছে আছে '
পাথরে মুখ গুঁজে
আমার জন্যে
আমার ছায়া ফোঁপাচ্ছে…
ডাঊকী বর্ডার
মূল অসমীয়া কবিতা - কিশোর ভট্টাচার্য
ঋত্বিকের বর্ডার নয়
না , কোমল গান্ধার নয়
আমি আসছি
বর্ডার পেরোব
অপেক্ষা করছে রবীন ও মারভা
বাংলাদেশ বর্ডার এত গভীরভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অনুভুতিও নেই
কোমল গান্ধারের রূপক নয়
আমার দিদিমা অনেকদিন আগে ওখানে
স্কুল খুলেছিলেন ও সাম্যবাদে বিশ্বাস রেখেছিলেন
আমি বসেছিলাম বাংলাদেশের একজন গণ্যমান্য মন্ত্রীর কামরায়
বললেন : ' লিখবেন তো কিছু কথা আপনার
দিদিমার নামে , আমরা প্রকাশ করব '
কিন্তু আমি তো অনেকদূর চলে এলাম ।