শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

জমাট বাঁধা রক্ত, পর্ব -৪

প্রস্তাবনা -জমাট বাঁধা রক্ত (গোটা তেজর সার)উপন্যাসের পটভূমি ১৯৭২ সনের অসমের ‘মাধ্যম আন্দোলন’।উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মহাবিদ্যালয় তথা বিশ্ববিদ্যালয়ে অসমিয়া ভাষা মাধ্যম করার আন্দোলনই ছিল ‘মাধ্যম আন্দোলন’।এই আন্দোলন অসমের সমাজ জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল তারই এক আংশিক চিত্র আমরা উপন্যাসে দেখতে পাব।রাজনৈতিক চক্রান্তে সুবিধাবাদীর দৌরাত্মে সর্বসাধারণ মানুষকে চিরকালই লাঞ্ছনা ভোগ করতে হয়।নতুন প্রজন্ম হাজার নিরাশা,বিপদের মধ্যেও আশার স্বপ্ন দেখে।এই আশার স্বপ্নই উপন্যাসটিকে এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা ময় ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

চার

কথাটা প্রথম উত্থাপন করল যোগেশ্বর। সে কাছারিতে প্রয়োজন পড়ায় গোলাঘাট গিয়েছিল। সেখানেই শুনে এসেছে। তখন পর্যন্ত অবশ্য গোলাঘাটে বিশেষ কোনো গন্ডগোল হয়নি। তবে সকলেই বলাবলি করছে গন্ডগোল হবে।

‘কী হয়েছে পবিত্র,তোদের কলেজে কোন গন্ডগোল হয়েছে নাকি? কলেজ কেন বন্ধ দিয়ে দিল?’

যোগেশ্বরেরসোজাসুজি প্রশ্নের উত্তর সে কীভাবে দেবে বুঝতে পারল না। তার মধ্যে সেখানে মন্টুও বসে রয়েছে। মন্টু ন-পাম গ্রামের ওপারে থাকা পূর্ববঙ্গ থেকে এসে বসবাস করা শরণার্থী পরিবারের ছেলে। অবশ্য তার জন্ম অসমে, এই ন-পাম গ্রামে। সে অসমিয়াতেই কথা বলে। পবিত্র দের সঙ্গে দুটো শ্রেণি অসমিয়া স্কুলে পড়েছিল। তারপরে চাষবাসের কাজে লেগে যাওয়ায় পড়াশোনা বাদ দিতে হল।

‘না না, এসব শহরের মানুষের গন্ডগোল’ পবিত্র বলল, ‘আমাদের এখানে এইসব নিয়ে চিন্তা করে করার মতো কিছু নেই। আমি যে ভাষায় কথা বলি,মন্টুও সেই ভাষায় কথা বলে। আমরা বন্যার জন্য এক জায়গা থেকে উঠে এসে অন্য জায়গায় যেভাবে বসতি স্থাপন করেছি, সেভাবে দেশ বিভাজনের ফলে মন্টুরা এসে এই ন-পাম গ্রামে বসতি স্থাপন করেছে। আমাদের দুজনের সমস্যা ভাষাটা নয়, সমস্যাটা বেঁচে থাকা নিয়ে। তা নয় কিনা বল তো মন্টু ?’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ’, মন্টু একটা সুযোগ পাওয়ার মতো বলল, ‘আমরা সকলে একই পরিবারের ভায়ের মতো বাস বসবাস করছি। মাঝখান থেকে এসব কী গন্ডগোল শুরু হল…।’

‘আমাদের এখানে এতদিনেও একটা হাই স্কুল হল না’ কণধর বলল, তুই কী কম দূরে গিয়ে স্কুলে পড়াশোনা করলি, আমরা তো ছেড়েই দিলাম, এখন আবার কি ভাষায় পড়ব তা নিয়ে…’

‘তুই থাম তো থাম’,গোলাপ ধমক দিয়ে বলল, ‘পবিত্রকে বলতে দে,তুই কী সব সবজান্তার মতো কথা বলছিস…’

‘কণধর ঠিকই বলছে গোলাপ’, পবিত্র বলল, ‘এতদিন আমরা কলেজে ইংরেজি ভাষায় পড়ছিলাম। শহরের ছেলেমেয়েরা ছোটবেলা থেকে ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করে বলে ওদের সুবিধা হয়, কিন্তু আমাদের মতো গ্রাম থেকে যাওয়া ছেলে মেয়েদের ইংরেজিতে বুঝতে যথেষ্ট অসুবিধা হয়। সেই জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের কথা চিন্তা করে সরকার কলেজগুলির শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষায় করতে চাইল। আমাদের কাছে অসমিয়া ভাষাটা যতটা সহজ, ঠিক সেভাবেই বাঙালি ছাত্র ছাত্রীর জন্য বাংলা ভাষা ততটাই সহজ, তাই তারা নিজেদের মাতৃভাষায় পড়তে চাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক কথা, নয় কি?’

‘হয় তো, কেন হবে না।’ প্রত্যেকেই সমস্বরে বলল।

‘এটা নিয়েই আসলে গন্ডগোল’ পবিত্র বলল, ‘আমাদের শিক্ষার মাধ্যম কী হবে তা নিয়ে বিভিন্ন দাবি উঠল। সেই দাবী শিক্ষানুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রইল না। এর মধ্যে রাজনীতি প্রবেশ করল। রাজনৈতিক দলগুলি এর সুযোগ নিতে চাইল। শেষ পর্যন্ত উলুখাগড়ার মরণ অর্থাৎ আমাদের মতো সাধারন মানুষগুলির মধ্যে শুরু হল বিদ্বেষ এবং ঘৃণা। আমরা আমাদের আসল সমস্যা থেকে ক্রমশ সরে এলাম।’

পবিত্র কথা বলে চলেছে। বাকিরা সবাই অবাক হয়ে শুনছে। কিছুক্ষণ থেমে পবিত্র পুনরায় বলল, ‘আমার একজন বন্ধু আছে, তার নাম অনিমেষ রায়। সে বলে- পৃথিবীতে কেবল দুটো ভাষা আছে- একটি শোষকের ভাষা এবং অপরটি শোষিতের ভাষা। মানে আমাদের রক্ত খেয়ে বড় হওয়া যে সমস্ত ধনী মানুষ রয়েছে তাদের একটি ভাষা এবং আমাদের মতো সাধারন খেটে খাওয়া যে সমস্ত মানুষ আছে তাদের জন্য একটি ভাষা।

‘আমি অবশ্য এই সমস্ত কথা ভালো করে বুঝতে পারি না, তোরা তো জানিস আমি কুয়োর ব্যাঙ হঠাৎ গিয়ে সাগরে পড়লাম। কিন্তু অনিমেষরা প্রথম থেকেই সাগরে রয়েছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বইপত্র পড়েছে, বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ পেয়েছে।’

পবিত্র কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল।

কারও মুখে কোনো কথা নেই। সবারই মনে কিছু একটা দুশ্চিন্তার ভাব। বিশেষ করে মন্টুর মুখে সেই ভাব যেন বেশ স্পষ্ট রূপে ধরা পড়েছে।

পবিত্র ভাবল কথার মোড়টা এখানেই ঘুরিয়ে দিলে ভালো হবে। মিছামিছি এসমস্ত কথা বেশি আলোচনা করলে সবার মনে সন্দেহ এবং দুশ্চিন্তা আরও বেশি করে বাড়বে। বিশেষ করে মন্টুর মুখখানায় স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ার মতো এই চাপটা দেখে বেশ খারাপ লাগল।

‘ আচ্ছা এসব কথা বাদ দে’ পবিত্র বলল, ‘ এসব কথা তোরা আবার গ্রামে গিয়ে বলাবলি করিস না। যা বলা হল, যা শুনলে এখানে সমস্ত ভুলে যা।’

‘ইস, আমরা আবার কার সঙ্গে আলোচনা করব।’ কণধর বলল,‘তুই অনেক কিছু জানিস বুঝিস, তার মধ্যে আবার গুয়াহাটি থেকে এসেছিস বলে জিজ্ঞেস করছি। কতজনের মুখ আর বন্ধ করবি, গ্রামে নানান কথা শোনা যাচ্ছে…’

‘কিন্তু আমাদের সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে যাতে কোনো ধরনের অপপ্রচার না হয়। কারণ এই সমস্ত আলোচনায় আজেবাজে কথা বড় বেশি প্রচার হয়। তাছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি এর সুবিধা নিতে পারে’- পবিত্র বলল।

পবিত্রের কথায় সবাই সায় দিল‌। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পবিত্র বলল, ‘আচ্ছা, একটা হাই স্কুল স্থাপন করার কথা নিয়ে আমরা যে নাম ঘরে সভার আয়োজন করেছিলাম, তার কাজ কতটুকু এগিয়েছে?’

‘তুই ও গেলি’, গোলাপ বলল, আমাদেরতো দেখছি বারো মাসে তেরো ঝামেলা। জমি থেকে শুরু করে গাই গরু সব দেখতে লাগে। ওদিকে গ্ৰেজিঙের মাটি ভেঙ্গে এতদিন যে চাষ করছিলাম সেটাও সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। এই সমস্ত ঝামেলায় শহরে আজকে মাটির হাকিম, কাল ফরেস্টের হাকিম… এদের সঙ্গে দেখা করতে যেতে হচ্ছে। কোথায় আর স্কুলের কথা ভাবব, সবার কাছে এখন দুমুঠো ভাতের জোগাড় করা প্রধান হয়ে উঠেছে…’

‘তুই এসেছিস ভালোই হয়েছে’, মন্টু বলল, এইসব চিন্তা তুই যেভাবে করতে পারিস, অন্য মানুষেরা পারে না। তুই থাকা দিনগুলোতে কিছু একটা কর…’

‘আমিও তাই ভাবছি’পবিত্র বলল,‘এই কয়েকদিনের মধ্যে আরও একটি নামঘরে সভার আয়োজন করা হোক এবং হাতে কলমে কিছু একটা কাজ করা হোক।’

‘স্কুল স্থাপন করব বলে স্থির করেছ’কণধর বল্ল,তবে পড়াবে কে?’

‘কেন মাস্টার’-যোগেশ্বর বলল।

‘হাঃ,হাঃ,হাঃ’ কিছু একটা রস পাওয়ার মতো কণধর বলল, ‘মাস্টার কি হাওয়া খেয়ে এখানে কাজ করতে আসবে? এই গ্রামে ওই প্রথম কলেজের মুখ দেখেছে,যে দুই একজন এর আগে আধমাইল পায়ে হেঁটে গিয়ে হাই স্কুলের গন্ডি পর্যন্ত পৌঁছেছিল, ওরা গিয়ে বাগানের মুহুরী হয়েছে, গ্রাম ছেড়েছে, বিহু বা সংক্রান্তিতেও তাদের দেখা পাওয়া যায় না। পবিত্র যদি কলেজ পাশ করে সে কি আর এই গ্রামে থাকবে? বা থেকেই কী করবে, তাইতো পবিত্র?’

‘কথাটা অবশ্য ঠিক’পবিত্র বলল, সরকারি অনুদান আদি আমরা চট করে পাব না। বাইরে থেকে মাস্টার আনার জন্য আমাদের বেতনও দিতে হবে। আমাদের পক্ষে সেভাবে বেতন দিয়ে মাস্টার রাখাটা সহজ হবে না। আমি অবশ্য পড়াশোনা শেষ করে গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছি না। কিন্তু আমার কলেজের গণ্ডি পার হতে দুবছর বাকি আছে। ততদিন পর্যন্ত আমরা স্কুল স্থাপন না করে নিশ্চয় আমরা বসে থাকতে পারব না…’

‘তাহলে কী করব বলে ভেবেছিস?’ মন্টু জিজ্ঞেস করল।

‘সেটাই সমস্যা। সেইজন্য আমি নাম ঘরে একটা সভা পাতার কথা ভাবছি।’- পবিত্র বলল। ‘সভা করাটা সমস্যা নয়’সোমেশ্বর বলল, তুই বা কতদিন থাকব্‌ সোনার গ্রামে অবশ্য দুই বছর কলেজে পড়া একটি ছেলে আছে। চাকরির খোঁজে মাঝে মাঝে শহরে যায়, জনগণ সবাই মিলে তাকে অনুরোধ করলে হয়তো…’

‘আমি আরও একটি কথা ভাবছি’ পবিত্র কিছু একটা চিন্তা করে বলল,‘আমাদের রেল স্টেশন মাস্টারের অঞ্জনা নামের একটি মেয়ে আছে। খুব বুদ্ধিমতী মেয়ে। প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক, প্রি-ইউনিভারসিটি পাস করেছে। আগামী বছর প্রাইভেটে বি-এ পরীক্ষা দেবে…’

মাস্টারের মেয়েকে কি কাজ করতে দেবে? তার মধ্যে সে তো বাংলায় কথা বলে। আমাদের ছেলেমেয়েকে কি পড়াতে পারবে?’-কণধর জিজ্ঞেস করল।

‘তাছাড়া দূরত্ব তো কম নয়, চার মাইল রাস্তা পায়ে হেঁটে আসতে হবে’, যোগেশ্বর বলল,ওরা সব আদরে বড় হওয়া মেয়ে,আমাদের মতো গ্রামের মেয়ে হলেও অবশ্য আলাদা কথা ছিল।’ ‘করতেই হবে সে কথা আমি বলছি না’,পবিত্র বলল,‘আমরা একবার চেষ্টা করে দেখতে পারি।আমি মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছি। সে ভালো অসমিয়া বলতে পারে। বাবার মতো বিকৃত উচ্চারণ নয়। তাছাড়া মেয়েটি গোলাঘাট থেকে প্রি-ইউনিভারসিটি পাস করা…’

‘তুই এতগুলি কথা কীভাবে জানলি?’গোলাপ বলল, স্টেশনে গেল্ল,আমি বুড়ো মাস্টার এবং পয়েন্টসম্যান ছাড়া আর কাউকে দেখতে পাই না।…’

‘আমিও আগে দেখিনি। এবার আসার সময় আমি বাড়িতে খবর দিয়ে আসতে পারিনি। সেজন্য আমার জিনিস গুলি স্টেশনে রাখতে হয়েছিল। এতদূর রাস্তা পায়ে হেঁটে আসতে হবেজেনে স্টেশন মাস্টার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জল খাবার খাইয়ে পাঠাল। তখনই দেখা হয়েছিল।’

‘তোর পছন্দ হলে আমাদের কি?’মন্টু বলল,আমাদের স্কুলএকটা হলেই হল, আমাদের তোপড়াশোনা হল না। ভাই বোনদের যদি কিছুটা লেখাপড়া শেখাতে পারি …’

‘ সেই জন্যই তো গতবার আসার সময় আমি তোদেরকে এত করে বলে গেলাম’,পবিত্র বলল,‘ আমাদের মতো যুবকরা এগিয়ে না এলে এসব হবে না। বুড়োদের উপরে সবসময় ভরসা করা যায় না। বাবাও বুড়ো হয়েছে। আগে এই সমস্ত কাজে বাবা অনেকটাই দায়িত্বনিত,কিন্তু আজকাল আর সেটা পারে না…’

‘কথাটা সত্যি’, গোলাপ বলল, ‘আমাদেরই করতে হবে। তুই আছিস ভালোই হল। নেতৃত্ব দেবার জন্য একজনকে দরকার। আমরা তাহলে এখন উঠছি। সন্ধ্যেবেলা মনেশ্বর দাদার দোকানে আসবি। আজকাল আমরা সবাই সেখানেই দেখা সাক্ষাৎ করি…’

‘দাঁড়া, দাঁড়া। তোদের চা টা …’

‘হবে হবে, সব সময়…’

মন্টুর কথা শেষ হতে না হতেই সাবিত্রী একটা কাঁসার থালায় কয়েক কাপ চা নিয়ে ঢুকল। ‘তোদের এত সময় লাগে এক কাপ চা দিতে’, পবিত্র বলল, গোলাপরা চলে যাবার জন্য উঠে দাঁড়িয়েছিল…’

‘এসো গোলাপ দাদা’ সাবিত্রী বলল, তোমাদের আজ এতই কাজ যে এখনই বেরিয়ে যাচ্ছ, আমি ভেবেছিলাম কিছুক্ষণ বসবে, তাই…’

‘ না, আমাদের আর কিসের কাজ’, গোলাপ বলল, পবিত্র এত কষ্ট করে এসেছে, সে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিক, এভাবে বসে আড্ডা মারলে হবে কি?…’

‘ও আমার কষ্ট হচ্ছে বলেই চলে যাবার জন্য তৈরি হলি?’পবিত্র বলল, ‘ আমি ভাবতেই পারিনি। ভেবেছিলাম তোদের কোনো কাজ আছে, আমি আর কী এমন…’

‘দাদা’, সাবিত্রী বাধা দিয়ে বলল, তুমি কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে থাকলেই হবে না, তোমাকে দেখার জন্য মায়ের কাছে কাকিমারা বসে আছে। তুমি একবার দেখা দিয়ে এসো, না হলে খারাপ পাবে…’

‘ও, আমি ভুলেই গিয়েছিলাম’ পবিত্র বলল, ‘তোরা একটু বস, আমি ভেতর থেকে আসছি…’

পবিত্র ভেতরে চলে গেল। বাকিরা চায়ের কাপে চুমুক দিল

ক্রমশ ...



লেখক পরিচিতি -১৯৪৫ সনের ৭ নভেম্বর নবীন বরুয়ার জন্ম হয়।শ্রী বরুয়া একজন ঔপন্যাসিক,প্রকাশক এবং খবরের কাগজের কলাম লেখক।১৯৬৫ সনে তাঁর লেখা উপন্যাস ‘কটন কলেজ’হোমেন বরগোহাঞি সম্পাদিত ষান্মাষিক পত্রিকা ‘নীলাচল’এ প্রকাশিত হয়(১৯৬৯)। ১৯৭০ সনে উপন্যাসটি পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়।গত পঞ্চাশ বছর ধরে উপন্যাসটির পাঠকদের কাছে চাহিদা এক অভিলেখ সৃষ্টি করেছে।ভারতীয় ভাষায় লেখা এটিই প্রথম ক্যাম্পাস নভেল।শ্রী বরুয়ার অন্যান্য উপন্যাসগুলি হল ‘মন অজন্তা’, ‘প্রেমিকা’, ‘অমোঘ নিবিড় অন্ধকার’, ‘ফিনিক্স পাখির গান’ইত্যাদি।একমাত্র গল্প সংকলন ‘একান্ত ব্যক্তিগত’।১৯৮৩ সনে সরকারি চাকরি ছেড়ে পূর্বাঞ্চল প্রকাশ নামে প্রকাশন সংস্থা গড়ে তোলেন।তিনি নর্থ ইস্ট বুক ফেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।


অনুবাদক পরিচিতি -১৯৫৮ সনে অসমের নগাঁও জেলার যমুনামুখে বাসুদেব দাসের জন্ম হয়।শৈশব কেটেছে গুয়াহাটি শহরে। ১৯৮২ সনে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়থেকে বাংলা সাহিত্য ও ভাষা তত্ত্বে এম এ পাশ করেন। আজ পর্যন্ত অসমিয়া অনূদিত গল্পের সংখ্যা চারশো পঞ্চাশটারও বেশি। অসমিয়া গল্পের অনুবাদ ছাড়া মৌলিক প্রবন্ধের পাশাপাশি অসমিয়া কবিতা এবং উপন্যাসও নিয়মিতভাবে অনুবাদ করে চলেছেন।প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা বাইশটি।গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের NEINAD নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অসমিয়া ভাষা-সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারের জন্যDistinguished Life Membership এর দ্বারা সম্মানিত করা হয়।